মোঃ আজিজুল হক তালুকদার : যুবক-তরুণদের ভাগ্য ফেরাতে কিশোরগঞ্জে শুরু হয়েছে জাপানী ভাষা শিক্ষা কোর্স। বেসরকারি সংস্থা ‘মেসার্স ক্যারিয়ার ফাইন্ডার’ এর উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই জাপানী ভাষা শিক্ষা কোর্স।
কারিগরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি জাপানী ভাষা শিখে সেদেশে গিয়ে মাসে একজন লাখ টাকা আয় করবেন। সেই স্বপ্নে অনেকেই ৬ মাসের ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। প্রথম ব্যাচে ভর্র্তি হয়েছেন ৪০ জন। ৫ মে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে প্রথম ব্যাচের ক্লাশ শুরু হয়েছে। ভাষা শিখে কারিগরি জ্ঞান নিয়ে জাপান গিয়ে তারা মাসে আয় করবেন এক লাখ সোয়া লাখ টাকা। কাজ করবেন সপ্তাহে দুইদিন।
জেলা শহরের একরামপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, একটি দ্বিতল ভবনের দোতলায় প্রশিক্ষণার্থীরা শীট দেখে গভীর মনযোগে জাপানী ভাষা লিখছেন। তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া এলাকার উদ্দীপন পাল। সংস্থাটির সত্ত্বাধিকারী এরশাদ উদ্দিন এই কোর্সের সরকারি অনুমোদন পেয়েছেন। সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শাহিনা শবনমের ১১ এপ্রিল স্বাক্ষরিত অনুমোদন পত্রে দেখা গেছে, চলতি সনের ১২ এপ্রিল থেকে আগামী বছর ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরের জন্য ‘টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ও স্পেসিফায়েড স্কিলড ওয়ার্কার’ পাঠানোর ক্ষেত্রে মেসার্স ক্যারিয়ার ফাইন্ডারকে রিক্রুটিং এজেন্সি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক জেলার করিমগঞ্জের এরশাদ উদ্দিন জানান, ‘কিশোরগঞ্জ অর্থনৈকিভাবে খুবই পশ্চাতপদ অবস্থানে রয়েছে। কিশোরগঞ্জের মানুষ ঢাকায় যাওয়া শিখেছে অনেক বিলম্বে, বিদেশ যাওয়া শিখেছে অনেক বিলম্বে। আমি জাপানের সঙ্গে আমদানি রপ্তানি ব্যবসা করছি ২০ বছর ধরে। জাপানীরাই বলেছেন তাদের দেশে অনেক কর্মী দরকার। ফলে আমি চাই কিশোরগঞ্জের যুবকরা জাপানের ভাষা শিখে সেদেশে গিয়ে ভাল আয় করুক। জাপানী ভাষার পাশাপাশি একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে মাসে এক লাখ সোয়া একলাখ টাকা আয় করতে পারবেন। জাপানের বাংলাদেশী দূতাবাস এবং বাংলাদেশের জাপানী দূতাবাস যাচাইবাছাই করার পর আমাকে যোগ্য মনে করে সরকার লাইসেন্স দিয়েছে।’ ভাষা শিক্ষাশেষে তাঁর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই জাপানে জনশক্তি পাঠানো হবে।
প্রশিক্ষক উদ্দীপন পাল জানান, তিনি অনলাইনে জাপানী ভাষা শিখেছেন। এখানে প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। সপ্তাহে দুইদিন ক্লাশ হবে। প্রথম ব্যাচে ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থী আছেন। বন্ধের দিন হওয়ায় কয়েকজন শিক্ষক এবং স্বল্প বেতনের সরকারি চাকুরিজীবীও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং কিছু ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে এই কোর্সের কথা জেনেছেন। এটি ৬ মাসের কোর্স। প্রশিক্ষক পুরো ক্লাশে সবার কাছে গিয়ে গিয়ে হাতেকলমে ভাষা লেখা শিখাচ্ছেন। তবে কোন মেয়ে প্রশিক্ষণার্থী দেখা যায়নি। প্রশিক্ষক জানান, মেয়েরাও প্রশিক্ষণের সুযোগটি নিতে পারেন, কোন বাধা নেই। আর এখানে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন মাপকাঠি রাখা হয়নি। প্রতিজনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা কোর্স ফি নেয়া হচ্ছে।
করিমগঞ্জের আশুতিয়াপাড়া এলাকার আরপি হাসান লিয়ন এবং দিগরখলা এলাকার নাজমুল হকসহ সকল প্রশিক্ষণার্থীই একটি উন্নত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় এখানে জাপানী ভাষা শিখতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply